এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি, ২০২৫) এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি অর্থবছরের মাঝপথে শতাধিক পণ্য ও সেবার উপর মূসক (মুল্য সংযোজন কর) ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ী সমাজ এবং সাধারণ মানুষের জন্য গভীর উদ্বেগজনক।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৯ জানুয়ারি প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে সরকার মূসক ও শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে, যা অংশীজনদের সাথে কোনো আলোচনা ছাড়াই কার্যকর করা হয়েছে। এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ-এর মতে, এই ধরনের আকস্মিক কর বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। আমদানিকৃত ফল, মুঠোফোন সেবা, ইন্টারনেট, এলপিজি গ্যাস, পোশাক, এবং এমনকি জীবনরক্ষাকারী ওষুধের উপর মূসক বৃদ্ধির প্রভাব সাধারণ মানুষের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।
বর্তমানে বার্ষিক ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্নওভার কর দিতে হবে। পূর্বে এই সীমা ছিল ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ সতর্ক করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগের বিরুদ্ধেও কথা বলে। তারা বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে শিল্পখাতের উৎপাদন খরচ বাড়বে এবং স্থানীয় শিল্প প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে। সংগঠনটি গ্যাসের অপচয় রোধ এবং অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে বিকল্প সমাধানের পরামর্শ দিয়েছে।
সংগঠনটি সরকারের প্রতি দীর্ঘমেয়াদী সহায়ক কর কাঠামো এবং নীতি ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। সুদের হার কমানো, মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা, এবং নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ তৈরির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ জনগণের উপর অতিরিক্ত করের চাপ না দিয়ে বিকল্প উপায়ে রাজস্ব বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দেয়। তারা অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় সংকোচন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া, বন্দরসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি, যানজট নিরসন, এবং ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য সরকারের প্রতি জোরালো আবেদন জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক জাকির হোসেন নয়ন, এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদের সমন্বয়ক আবুল কাসেম হায়দার, গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী খোকন, জাকির হোসেন, আতিকুর রহমান প্রমুখ।