নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সময় আয়োজিত দেয়ারওয়ার্ল্ডের বার্ষিক উচ্চ-স্তরের বৈশ্বিক শিক্ষা নৈশভোজে বিশ্বনেতা এবং পরিবর্তনশীলদের একত্রিত করে সকলের জন্য শিক্ষার পক্ষে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) নিউইয়র্কের একটি হোটেলে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ ছিল ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁর অগ্রণী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ দেয়ারওয়ার্ল্ডের আনলক বিগ চেঞ্জ পুরষ্কার প্রদান এবং শিক্ষার প্রতি তাঁর অটল অঙ্গীকার।
দেয়ারওয়ার্ল্ড একটি বিশ্বব্যাপী শিশু দাতব্য সংস্থা যা বিশ্বব্যাপী শিক্ষা সংকটের অবসান এবং পরবর্তী প্রজন্মের সম্ভাবনাকে উন্মোচন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত এবং যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং দেয়ারওয়ার্ল্ডের চেয়ারপারসন এবং গ্লোবাল বিজনেস কোয়ালিশন ফর এডুকেশনের নির্বাহী চেয়ারপারসন সারাহ ব্রাউনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে জীবন ও সম্প্রদায়ের রূপান্তরে শিক্ষার শক্তি উদযাপন করা হয়।
ইউনূসকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সাথে সম্মানিত করা হয়, কিন্তু ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ – এবং শিক্ষাকে সেই মিশনের একটি মূল অংশ করে তোলা – ইউনূসের আজীবনের লক্ষ্য ছিল যা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সবচেয়ে গভীরভাবে অনুরণিত হয়েছিল।
পুরস্কার প্রদানের সময়, গর্ডন ব্রাউন ইউনূসের প্রশংসা করেন একজন বিশ্বব্যাপী পথিকৃৎ হিসেবে যার কাজ লক্ষ লক্ষ মানুষকে ক্ষমতায়িত করেছে:
গত ৫০ বছরে বেসরকারি খাতে কোনও প্রকল্প মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু করেনি, তিনি বলেন।
পুরস্কার গ্রহণ করে, ইউনূস পুনর্ব্যক্ত করেন যে ঋণ একটি মৌলিক মানবাধিকার, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার সমান গুরুত্ব।
“আপনি যদি আর্থিক ব্যবস্থার দরজা খুলে দেন, তাহলে কেউ আর দরিদ্র থাকবে না,” তিনি বলেন। “আমি ক্ষুদ্রঋণ প্যাকেজে শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করেছি, এবং আমরা নারীদের তাদের সন্তানদের স্কুলে যেতে সাহায্য করেছি।”
তার বক্তব্যে, ইউনূস আর্থিক ক্ষমতায়ন এবং শিক্ষার সুযোগের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের উপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি এমন ব্যক্তিদের গল্প শেয়ার করেছিলেন – বিশেষ করে নারীদের – যারা ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে তাদের পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে এবং তাদের সন্তানদের স্কুলে যেতে সাহায্য করতে সক্ষম হয়েছিল।
ইউনূস শিক্ষার ঐতিহ্যবাহী মডেলগুলিকেও চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, ছোটবেলা থেকেই সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
“ছোটবেলায়, আপনার কীভাবে একজন উদ্যোক্তা হতে হয় তা শেখা উচিত,” তিনি বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার্থীদের ব্যবসাকে ভালোর জন্য শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে শেখানো উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি জায়গা হওয়া উচিত যেখানে মানুষের সমস্যা সমাধান কেবল উৎসাহিত করা হয় না, বরং প্রত্যাশিত, তিনি আরও বলেন।
“সমস্ত মানুষের সমস্যা ব্যবসায়িক উপায়ে সমাধান করা যেতে পারে,” ইউনূস নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র: প্রধান উপদেষ্টা জিওবি অফিসিয়াল ফেসবুক পৃষ্ঠা থেকে।
