May 4, 2025

শিরোনাম
  • Home
  • রাজনীতি
  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ

Image

‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের’ দাবিতে শুক্রবার (২ মে, ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এনসিপি। ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থেকে বিভিন্ন দাবি ও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “অবিলম্বে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। নৌকা মার্কাকে বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। বিচার চলা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আইন করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।”

তিনি অভিযোগ করেন, গত জুলাই মাসে গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনো দৃশ্যমান নয়। “জুলাইয়ের শহীদ পরিবার ও আহতদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রের, সেটিও নিশ্চিত করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার,” বলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, “বিভিন্ন এলাকায় মামলা-বাণিজ্য চলছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর আশ্রয়ে আওয়ামী লীগ আবারও তৃণমূলে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।”

আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “যদি এই সরকার বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তবে আমরা বসে থাকব না। জনতার আদালতেই ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী লীগের বিচার হবে।”

ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “দ্রুততম সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় জনতার আদালত গঠিত হবে।”

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, “আওয়ামী লীগ প্রশ্ন অমীমাংসিত রেখে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ৫ আগস্ট জাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে—নৌকা, আওয়ামী লীগ কিংবা মুজিববাদী চিন্তার নামে কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে চলবে না।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের নাম ইসির নিবন্ধন তালিকা থেকে কেটে দিয়ে সন্ত্রাসীদের খাতায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করে বলেন, “ইসি একটি দলকে নির্বাচনের মাধ্যমে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “আওয়ামী লীগ নামে কোনো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। গণপরিষদের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়ন না হলে ১৮ কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে।”

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে পরিষ্কার অবস্থান নিতে হবে। রাজনীতির সুযোগ পেলে তারা আবার গণহত্যা চালাবে।”

আরেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, “যেখানে আওয়ামী লীগের মিছিল দেখা যাবে, সেখানেই প্রতিবাদ করতে হবে। তাদের নেতা–কর্মীদের পুলিশে সোপর্দ করতে হবে।”

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা বলেন, “বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে না।”

সমাবেশে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে বলেন, “আমরা কোনো অনুরোধ করছি না—আমরা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিচ্ছি: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”

উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “আমাদের আন্দোলন চলবে যত দিন না আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের মাটি থেকে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করা যায়।”

সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন তাজনূভা জাবীন, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, আতিক মুজাহিদ, হুমায়রা নূর, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, মাহিন সরকার প্রমুখ। তাঁরা অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার জোর দাবি জানান।

Scroll to Top