March 14, 2025

শিরোনাম
  • Home
  • মতামত
  • ঢাকা-ইসলামাবাদ এফওসি চলতি বছর অনুষ্ঠিত হতে পারে

ঢাকা-ইসলামাবাদ এফওসি চলতি বছর অনুষ্ঠিত হতে পারে

Image

প্রায় ১৫ বছরের বিরতির পর ঢাকায় এ বছর ঢাকা-ইসলামাবাদ ফরেন অফিস কনসালটেশন (FOC) অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা, ইসলামাবাদ ও করাচির সূত্রগুলো। সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ বৈঠক ২০১০ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

বাংলাদেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঢাকা-ইসলামাবাদ সংলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং এটি বাংলাদেশ-পাকিস্তানের বহুপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহায়তা করতে পারে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আলোচনায় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) কাঠামোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শিক্ষাবৃত্তি বিনিময়, একাডেমিক গবেষণা, এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত যৌথ প্রকল্প গ্রহণের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

এদিকে, সদ্য বিদায়ী বাংলাদেশি হাইকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিক ইসলামাবাদে চার বছর কাজ করেছেন এবং করাচি মিশনেও দায়িত্ব পালন করেছেন, যার লক্ষ্য ছিল দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন।

বর্তমান বাংলাদেশি হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন খান সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে কাজ করছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। আরেক কর্মকর্তা জানান, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে, বিশেষ করে ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, বন্দর সক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং দীর্ঘদিনের আটকে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের সমস্যার সমাধানের মতো বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ বর্তমানে ৮০০-৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে রয়েছে, যা দুই দেশের প্রকৃত সম্ভাবনার তুলনায় অনেক কম বলে মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআইয়ের এক পরিচালক।

এফবিসিসিআইয়ের এক নেতা বলেন, “যদি বাংলাদেশ পাকিস্তানি ব্যবসায়ী ও সাধারণ নাগরিকদের যথাযথ গতি অনুযায়ী ভিসা প্রদান না করে, তাহলে বাণিজ্যের সম্ভাবনা কম থাকবে।”

এদিকে, ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (FPCCI) এক প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ, সম্প্রতি বাংলাদেশ বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহজীকরণ, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু করা এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

FPCCI সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ বলেন, “পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে চায়, কিন্তু ভিসা জটিলতা ও সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।”

এছাড়া, পাকিস্তানি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল কৃষি উৎপাদন, শিক্ষা, পর্যটন ও সিরামিক খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশি হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন খান জানিয়েছেন, “পাকিস্তান-বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই চালু হবে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করবে।”

তিনি আরও জানান, কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে ঢাকা, করাচি ও লাহোরকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ইসলামাবাদ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ICCI) সভাপতি নাসির মনসুর কুরেশি বলেছেন, “দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সংযোগ দরকার, যাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া যায়।”

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, বাণিজ্য মেলা ও যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

Scroll to Top