সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও দ্রুত সম্প্রসারণের পথে এগিয়েছে। দেশের ক্রয় ব্যবস্থাপক সূচক (PMI) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯.১, যা আগস্টের তুলনায় ০.৮ পয়েন্ট বেশি। এই ফলাফল অর্থনীতির সার্বিক প্রবৃদ্ধি এবং সব খাতে উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (MCCI), ঢাকা এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ (PEB) যৌথভাবে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের পিএমআই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনের কারিগরি সহায়তা দিয়েছে সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেসিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট (SIPMM) এবং এই উদ্যোগে সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের সঠিক ও সময়োপযোগী চিত্র তুলে ধরার লক্ষ্যে এই পিএমআই সূচকটি ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকদের জন্য এক যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সেপ্টেম্বরে দেশের চারটি প্রধান খাত—কৃষি, উৎপাদন, নির্মাণ ও সেবা—সবগুলোতেই সম্প্রসারণের ধারা বজায় ছিল, যা অর্থনীতির ব্যাপক ইতিবাচক গতিশীলতার প্রতিফলন।
উৎপাদন খাত টানা ১৩তম মাসে সম্প্রসারণের ধারা বজায় রেখেছে এবং এ মাসে তা আরও দ্রুত গতিতে ঘটেছে। নতুন অর্ডার, রপ্তানি, উৎপাদন, ইনপুট ক্রয়সহ সব সূচকেই প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। কর্মসংস্থান সূচকও উন্নতি করে সম্প্রসারণ পর্যায়ে ফিরে এসেছে।
কৃষি খাত আবারও সম্প্রসারণ পর্যায়ে ফিরেছে। নতুন ব্যবসা ও উৎপাদন কার্যক্রম বেড়েছে, আবহাওয়ার উন্নতি ও খরচ নিয়ন্ত্রণে আসায় এই খাতের কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
নির্মাণ খাত চার মাস পর সম্প্রসারণ পর্যায়ে ফিরেছে। নতুন কাজ, নির্মাণ কার্যক্রম ও কর্মসংস্থান সূচক বেড়েছে, যা অবকাঠামো ও আবাসন খাতে নতুন গতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।
সেবা খাত টানা ১২তম মাসে সম্প্রসারণের ধারা বজায় রাখলেও, গত মাসের তুলনায় কিছুটা ধীরগতির ছিল। নতুন ব্যবসা ও কর্মসংস্থানে প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি খাতটির গতিকে কিছুটা শ্লথ করেছে।
ভবিষ্যৎ ব্যবসা সূচকে উৎপাদন, নির্মাণ ও সেবা খাতে দ্রুত সম্প্রসারণের ইঙ্গিত মিলেছে। তবে কৃষি খাতে সম্প্রসারণের হার কিছুটা ধীর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ড. এম. মসরুর রিয়াজ বলেন, “সর্বশেষ পিএমআই ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি কিছুটা দ্রুত হারে সম্প্রসারিত হয়েছে। আবহাওয়ার উন্নতি ও নতুন অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের ফলে কৃষি ও নির্মাণ খাত পুনরায় সম্প্রসারণে ফিরেছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সেবা খাতের সম্প্রসারণ কিছুটা ধীর হয়েছে।”
পিএমআই সূচকের ধারাবাহিক উত্থান ব্যবসায়িক আস্থা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ইঙ্গিত বহন করছে।











