October 25, 2025

শিরোনাম
  • Home
  • জাতীয়
  • তরুণদের সোশ্যাল বিজনেসে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

তরুণদের সোশ্যাল বিজনেসে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

Image

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত ‘সোশ্যাল বিজনেস, যুব ও প্রযুক্তি’ বিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সাইড ইভেন্টে এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আজকের বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও সংঘাতের মতো বহুমুখী সংকটে জর্জরিত। এই সংকটগুলো পারস্পরিকভাবে সম্পর্কিত এবং বৈশ্বিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নকে হুমকির মুখে ফেলছে। তিনি জোর দেন যে, পুরোনো সমাধান দিয়ে নতুন সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়; প্রয়োজন নবায়িত বহুপাক্ষিক কূটনীতি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং টেকসই উন্নয়নে সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিনি উল্লেখ করেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির পাশাপাশি দেশটি জলবায়ু বিপর্যয়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার মতো বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তিনি উন্নয়ন সহযোগিতা হ্রাস না করে বরং তা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মুনাফাকে মানুষের ওপরে স্থান দেওয়া হয়েছে, ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। তিনি মুনাফাকেন্দ্রিক অর্থনীতি থেকে সামাজিক কল্যাণকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে রূপান্তরের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “সোশ্যাল বিজনেস” আর নিছক ধারণা নয়—এটি আজ একটি বৈশ্বিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা এমনকি খেলাধুলা ক্ষেত্রেও সামাজিক ব্যবসা প্রমাণ করেছে যে, আর্থিকভাবে টেকসই থেকে সামাজিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

মূল বক্তৃতায় তিনি যুবসমাজকে এই পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনশীলতাই ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্ধারণ করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), বিগ ডাটা, ব্লকচেইন ও আইওটি’র মতো প্রযুক্তিকে সামাজিক ব্যবসার নীতির সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও স্বচ্ছ ত্রাণ বিতরণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব।

প্রযুক্তির ঝুঁকি যেমন গোপনীয়তা লঙ্ঘন, অ্যালগরিদমিক পক্ষপাত বা সাইবার নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় নৈতিক উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি তাঁর ‘থ্রি জিরো’ ভিশন—শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদসংকেন্দ্রণ এবং শূন্য বেকারত্বের পাশাপাশি শূন্য বর্জ্য উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি তরুণদের ‘৩-জিরো ক্লাব’ গঠনের আহ্বান জানান, যাতে তারা পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন, সামাজিক উদ্যোক্তা হওয়া এবং বৈষম্য হ্রাসে কাজ করতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “সামাজিক ব্যবসা, যুবশক্তি এবং প্রযুক্তির শক্তি একত্রে harness করতে পারলে জটিল বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব। ঐক্য ও সহযোগিতার মধ্য দিয়েই আমরা একটি ন্যায়সঙ্গত, টেকসই ও আশা-ভরসায় পূর্ণ নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে পারব।”

Scroll to Top