August 4, 2025

শিরোনাম

যানজটে নাকাল যশোরবাসী

Image

যশোর প্রতিনিধিঃ

যশোর শহরের সড়কগুলোতে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে রিক্সা, ভ্যান ও ইজিবাইক চলাচল। প্রশস্তের তুলনায় সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ যানজটে ভোগান্তি বেড়েছে যশোরের নাগরিকদের। বিশেষ করে স্কুল শুরু ও ছুটির সময় যানজট তীব্র হয়।

শুধু যানবাহনই নয়, গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে এখন সাধারণ মানুষের হেঁটে চলাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ইজিবাইক ও রিকশার দৌরাত্ম থামানো যাচ্ছেনা। এ সমস্যা নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কার্যত কোনো ভূমিকা পালন করছে না বলে অভিযোগ শহরবাসীর। এমনকী পৌরসভার ভূমিকাও নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সরেজমিনে গত তিনদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও অলিগলি ও সংযোগ সড়কগুলো ঘুরে দেখা মেলে এমন যানজটের দৃশ্য। সকাল থেকে যানজট পরিস্থিতি তেমন গুরুতর না হলেও বেলা ১১টার পর থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত শহরের বকুলতলা থেকে হাসপাতাল মোড় ও নিকুঞ্জের মোড়, বকুলতলা থেকে জেল রোড এবং বকুলতলা থেকে চৌরাস্তা এমনকি আরএন রোড পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। আর এ সময়ে ছোটখাটো যানবাহনে চড়ে গন্তব্যে যাবার সময় যানজটে পড়ে আটকে থাকে স্কুল-কলেজ ও অফিস, হাসপাতালগামীসহ জনসাধারণ।

অন্যদিকে ট্রাফিক পুলিশ প্রধান সড়কগুলোতে ইজিবাইক এবং রিক্সার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে এ সকল ইজিবাইক ও রিক্সা শহরের অলিগলি এবং সংযোগ সড়কগুলো দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। এ সকল অলিগলিতেও অতিরিক্ত মাত্রায় তিন চাকা ও দুই চাকার যানবাহন চলাচল করায় যানজট তো আছেই পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

সোমবার সকাল থেকেই যানজটে যশোর শহর স্থবির হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে ট্রাফিক পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে। এখানকার যানজটের প্রভাব পড়তে দেখা যায় জেলরোড, মুজিব সড়ক, গাড়িখানা রোড ও মাইকপট্টি চৌরাস্তা মণিহার এলাকাজুড়েই। শুধু দড়াটানা মোড়েই দেখা যায় যানজনে আটকে রয়েছে অসংখ্য ইজিবাইক। গত শনিবার ও রবিবারও দেখা গেছে শহরে এমন চিত্র।

কথা হয় কয়েকজন পথচারির সাথে। তারা বলেন, যশোর শহর এখন যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অবস্থা ভয়াভয় রূপ ধারণ করে। যেন পুরো শহরই স্থবির হয়ে যায়। এমনকি রবিবার সন্ধ্যায় এরুপ অবস্থা দেখা গেছে।

কয়েকজন ইজিবাইক চালক ও রিকশা চালকদের সাথে কথা বলে যানা যায় লাইসেন্স না থাকলেও তারা রাস্তায় নেমেছেন, পেটের দায়ে। ভোরেই তারা যানবহন নিয়ে শহরে চলে আসেন। রাতে বাড়ি ফেরেন। তারা আরও বলেন, এখন তাদের কেউই বাধা দিচ্ছেন না। যাত্রী বেশি পাচ্ছেন, টাকাও বেশি উপার্জন হচ্ছে।

এসময় কথা হয় কয়েকজন সাধারণ পথচারির সাথে। তারা বলেন, রাস্তায় এখন নিয়ম কানুন কিছুই মানা হচ্ছেনা। যে যার মতো ইচ্ছে চলাচল করছেন। তাদেরকে বাধা দেয়ারও কেউ নেই। তারা বলেন, বর্তমানে শহরে পায়ে হেঁটে চলাচল করতেই কষ্ট হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ বলেন, ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহের প্রায় সব দিনেই এখন শহরে তীব্র যানজট দেখা যায়। আগে যানজট থাকলেও এমন পরিস্থিতি ছিল না। কয়েক সপ্তাহ ধরে যানজট ক্রমেই বাড়ছে বলে অভিযোগ করছেন তারা।

ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মাহাফুজুর রহমান বলেন, নির্দেশনা না আসায় তারা এখনো কোনো অভিযানে অংশ নেননি। ফলে মামলাও হচ্ছেনা। অনেকেই হয়তো এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে তিনি পৌর প্রশাসকের সাথে কথা বলেছেন। বৈধ যানবহনের প্রকৃত সংখ্যা তাদের কাছে নেই। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে তা চাওয়া হয়েছে। দ্রুতই অভিযানে নামবেন বলে জানান।

যশোর পৌরসভার প্রশাসক রফিকুল হাসান বলেন, ইতিমধ্যে তারা যানজট নিরসনে কাজ শুরু করেছেন। বিভিন্ন বৈধ যানবহনের নির্দিষ্ট সংখ্যা তারা বের করছেন। দ্রুতই তারা অবৈধ যানবাহন চলাচলে অভিযানে নামার আশ্বাস দেন তিনি।

Scroll to Top