জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) নিউ ইয়র্কের জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উদ্দেশ্যমূলক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা বিমানবন্দরে এ হামলার শিকার হন। সরকার দাবি করেছে, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগী ও সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মনে করছে, এই নিন্দনীয় ঘটনার মাধ্যমে শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা “বিধ্বংসী ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতি”র একটি মর্মান্তিক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেছে সরকার।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সফরের সময় সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। শুরুতে প্রতিনিধিদলকে একটি নির্দিষ্ট ভিভিআইপি গেট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ মুহূর্তের ভিসাজনিত জটিলতার কারণে বিকল্প পথে যেতে হয়, যার ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ সত্ত্বেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার ও নিরাপত্তা সুবিধা দিতে ব্যর্থ হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। সরকারের দাবি, ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে।
সরকার জানিয়েছে, এই ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিনিধিদলের সদস্যদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় রাখা হচ্ছে।
বিবৃতির শেষাংশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণতান্ত্রিক নীতি ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে জানিয়েছে, রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা দেশের ভেতরে বা বাইরে যেখানেই ঘটুক না কেন, তা সহ্য করা হবে না। এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।











