দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিতকরণসহ চ্যালেঞ্জ উত্তোরণের উপায় নির্ধারণে ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, অর্থনীতিবদি, গবেষক এবং অংশীজনদের নিয়ে বিজনেস কনফারেন্স করেছে সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসসিসিআই) এবং এফবিসিসিআই।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব জনাব মাহবুবুর রহমান। কনফারেন্সে “ইমার্জিং ট্রেডস ইন গ্লোবাল পলিটিকস অ্যান্ড ইমপ্লিকেশনস ইন দ্য গ্লোবাল ইকোনমিক অর্ডার” এবং ইনক্রিজিং সাউথ এশিয়া ইকোনমিক কোঅপারেশন: অপশনস ফর এনহ্যান্সিং কনেক্টিভিটি, ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট” শীর্ষক ২টি পৃথক সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে সার্ক চেম্বারের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য তুলনামূলকভাবে কম। আমাদেরকে এর কারণসমূহ চিহ্নিত করতে হবে। তিনি বলেন, এ বাঁধাসমূহ দূর করতে হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে অটোমেশন, ক্রস বর্ডার ট্যারিফ এবং নন ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতা, পারষ্পরিক অবিশ্বাস দূর করাসহ ই-কমার্স, ফিন-টেক চালু করে বাণিজ্য সহজীকরণে গুরুত্ব দিতে হবে।
দক্ষিণ এশিয়াকে একটি শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন হাব হিসেবে গড়ে তুলতে সার্কভুক্ত দেশসমূহকে একসাথে কাজ করারও আহ্বান জানান মোঃ জসিম উদ্দিন।
এর আগে, এফবিসিসিআই’র মহাসচি মোঃ আলমগীর বলেন, পর্যটন, তথ্য-প্রযুক্তি, জ্বালানিসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতের উন্নয়নে একসাথে কাজ করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার প্রত্যেক দেশই সুফল পাবে। পাশাপাশি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড -এর সুবিধাকে কাজে লাগাতে দেশসমূহকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কনফারেন্সের প্রথম সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাশরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা পরিবর্তন হচ্ছে। সেই সাথে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাও বাড়ছে। প্রভাব পড়ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে। এ অবস্থায় বিশ্ব বাণিজ্য ও অর্থনীতির বিকাশে পুরো ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

দ্বিতীয় সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। তিনিএশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্যে- রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, শুল্ক ও অশুল্ক বাধা, প্রাতিষ্ঠানিক অদক্ষতাসহ বেশকিছু চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন।
এ সময়, বাণিজ্য সম্প্রসারণে ব্যবসার ব্যয় হ্রাস, সরকারি-বেসরকারি পদক্ষেপ গ্রহণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিনিয়োগ আকর্ষণ, শিল্পের সঙ্গে শিক্ষার সংযোগ, সম্পদ ও কাঁচামালের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণসহ বেশকিছু পরামর্শ তুলে ধরেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য বাধা দূরীকরণসহ দেশি বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে প্রচারনায় গুরুত্ব দেওয়ার আহবান জানান সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক (ইকোনমি, ট্রেড এন্ড ফাইন্যান্স) ভাবেশ আর ত্রিভেদি।
অনুষ্ঠানের সমাপনি বক্তব্যে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, দক্ষিণ এশিয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজনেস হাব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শক্তিশাল রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরী। সামনের দিনগুলোর নন-ট্যারিফ, প্যারা ট্যারিফ নিষেধাজ্ঞা আরও আসতে পারে। এসব চ্যালেঞ্চ মোকাবেলায় রাষ্ট্র প্রধানদের একসাথে বসতে হবে।
কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, সার্ক চেম্বার এবং এফবিসিসিআইর প্রতিনিধিবৃন্দ ও অন্যান্যরা।











