বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর আয়োজনে মঙ্গলবার (০১ জুলাই, ২০২৫) বিকেলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো “গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা” শীর্ষক আলোচনা সভা এবং শহীদ পরিবারের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভারচ্যুয়ালি যুক্ত হন বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।


আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। সভাপতিত্ব করেন “জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বর্ষপূর্তি পালন কমিটি”-র আহ্বায়ক ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তারেক রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “প্রতিটি ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য না হলেও জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য গড়ে তোলা সময়ের দাবি।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে একটি জাতীয় সরকার গঠন করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে।”

বেগম খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “নতুন করে যে গণতান্ত্রিক সুযোগ তৈরি হয়েছে তা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।”


অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও শহীদ পরিবারের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা স্মারক (ক্রেস্ট) প্রদান করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাদের হাতে ছিল শহীদ স্বজনদের ছবি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।








জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন ও অধ্যাপক নাহরিন খানের যৌথ পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহ উদ্দিন আহমদ, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, নেজামী ইসলাম পার্টির একেএম আশরাফুল হক, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, এনসিপির আজিজুর ইসলাম আদিব, হেফাজতে ইসলামের মাওলানা জোনায়েদ আল হাবিব,এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মঞ্জরুল হক আফেন্দি, বাংলাদেশ জাসদের নাজমুল হক প্রধান, খেলাফত মজলিশের মাওলানা আহমেদ আলী কাশেমী, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বক্তব্য রাখেন।
এই অনুষ্ঠানে গুম হওয়া ইলিয়াস আলীর সহধর্মিনী তাহসিনা রশদীর লুনা, ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে নির্যাতনের শিকার চিকিৎসক সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময়ে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাইদের ভাই রমজান আলী, মীর মুগ্ধের বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, ওয়াসীমের বাবা শফিউল আলম, ইয়ামিনের বাবা মহিউদ্দিন, ফারহান ফাইয়াজের ছোট বোন ফারিন, আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, পুরানা ঢাকায় বিশ্বজিৎ দাশের বাবা আনন্দ দাস, আবদুল্লাহ বিন জাহিদের মা ফাতেমাতুজ জোহরা, নুরুজ্জামান জনির ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরা, পারভেজ হোসেনের মেয়ে আবিদা ইসলাম হৃদি, কাজী ফাহমীম জাফরের মা কাজী লুলুল মাকমিম, গুম থেকে বেঁচে যাওয়া বিএনপি গণশিক্ষা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকার খোকন এবং ‘মায়ের ডাক’ এর আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম তুলি, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গু নাভিল, পুলিশের গুলিতে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া রেদোয়ান হোসেন রিয়াদ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন পেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।