বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ মূল্যায়নের সূচক হিসেবে ‘বাংলাদেশ বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স (বিবিএক্স) ২০২৪–২৫’ প্রকাশ করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর ২০২৫) চতুর্থবারের মতো এই সূচক প্রকাশ করা হয়। এটি দেশের বেসরকারি খাতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার একটি তথ্যনির্ভর সার্বিক চিত্র তুলে ধরে। উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড (ডিএফএটি)।
বিবিএক্স ২০২৪–২৫ এ বাংলাদেশের স্কোর হয়েছে ৫৯.৬৯, যা আগের বছরের ৫৮.৭৫ স্কোরের তুলনায় সামান্য উন্নতি নির্দেশ করে। তবে এই সূচক এখনও “গুরুতর প্রতিবন্ধকতা” শ্রেণিতে রয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, উৎপাদন ব্যয়ের বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, ঋণের সুদহার বৃদ্ধি, বিনিময় হার অস্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা—এসব কারণে সার্বিক ব্যবসায়িক পরিবেশ এখনও চ্যালেঞ্জপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

গুলশানে এমসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সূচক প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী নেতা, শিল্পখাতের বিশেষজ্ঞ ও উন্নয়ন সহযোগীরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় বাণিজ্য উপদেষ্টা মো. শেখ বশির উদ্দিন এবং অতিথি অব মান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মি. বেন কারসন, অস্ট্রেডের (Austrade) বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশনার।
অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য দেন এমসিসিআই সভাপতি মি. কামরান টি. রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ড. এম. মাসরুর রেয়াজ। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি মি. আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, জেট্রো বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মি. কাজুইকি কাতাওকা এবং বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিস রুপালি চৌধুরী।
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হলো বেসরকারি খাত—যা বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা রাখছে। দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ মূল্যায়নের জন্য কোনো দেশীয় সূচক না থাকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ঘাটতি ছিল। সেই প্রয়োজন মেটাতেই ২০২১ সালে এমসিসিআই ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ যৌথভাবে প্রথম বিবিএক্স সূচক প্রকাশ করে। বর্তমানে এটি একটি বিশ্বাসযোগ্য ও নীতিনির্ধারণী হাতিয়ার হিসেবে স্বীকৃত, যা নীতি সংলাপ, সংস্কার প্রক্রিয়া এবং প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক পরিবেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।











